কোলেস্টেরল থেকে মুক্তির উপায়

             ◆কোলেস্টেরল? সাবধান!◆
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেই যে তা অসুখের ইঙ্গিতবাহী, এমনটা নয়। গুড কোলেস্টেরল বেশি থাকা ভাল।কোলেস্টেরল শুনলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোলেস্টেরলের প্রয়োজন রয়েছে। তবে তা বেড়ে গেলে চিন্তার l কারণ এই সমস্যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

●কোলেস্টেরল কি? 
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়।যে সব খাদ্যে কলেস্টেরল রয়েছে তা হলো চিজ, ডিমের কুসুম, গরুর মাংস, পাঁঠার মাংস,মুরগির মাংস এবং চিংড়ি মাছ l মাতৃদুগ্ধেও কলেস্টেরল যথেষ্ট পরিমাণে থাকে l শাকসবজি বা ফলে কলেস্টেরল থাকে না l 

●প্রকারভেদ : 
দেহে কোলেস্টেরল (Cholesterol) দু'ধরনের হয়। ভালো কোলেস্টেরল (Good Cholesterol) যা কোষের গঠনে একান্ত প্রয়োজনীয়। শরীরে একাধিক হরমোনের সৃষ্টির জন্যও শরীরে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) প্রয়োজন। অপরদিকে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা বেড়ে গেলে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। খারাপ কোলস্টেরলের (Bad cholesterol) জন্য স্ট্রোকের ঝুঁকি ও হৃদরোগের (Heart Diseases) প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। 
কোলেস্টেরলের মধ্যে এলডিএল সবচেয়ে ক্ষতিকারক, তারপরে ভিএলডিএল এবং এইচডিএল হার্টকে রক্ষা করে। তাই শরীরে এলডিএল, ভিএলডিএলের মাত্রা যত কম থাকবে তত ভাল। অন্যদিকে, এইচডিএলের মাত্রা যত বেশি তা শরীরের জন্য ভাল।  রক্তে যদি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যধিক হারে বেড়ে যায় তখন হার্ট অ্যার্টাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই সময় শরীরে কিন্তু অক্সিজেন যুক্ত রক্তও কম প্রবাহিত হয়। আর তাই প্রত্যেক মানুষেরই উচিত বছরে অন্তত একবার কোলেস্ট্রল-ট্রাইগ্লিসারাইডের পরীক্ষা করানো।

●কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা যে রকম হওয়া উচিত:
HDL: ৫০ mg/dL এবং তার উপরে
LDL: ১০০ mg/dL থেকে ১৫০ mg/dL
VLDL: ২৫ mg/dL এবং কম
TG- ১৫০ mg/dL এবং কম

●খাদ্যাভ্যাস:
কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেমন জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং। প্রয়োজনে ওষুধ খেতে হবে। রোজকার ডায়েট থেকে অতিরিক্ত চর্বি, কার্বোহাইড্রেট এসব আগে বাদ দিতে হবে। কিন্তু প্রচুর পরিমাণ ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রোটিন, খনিজ যুক্ত খাবার খেতে হবে। এছাড়াও ওটস, গোটা শস্য, প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি, ফল এসব রাখতে হবে ডায়েটে। বিশেষ করে টক জাতীয় কোনও ফল। রোজ আখরোট, আমন্ড একমুঠো করে খেলেও ভাল ফল পাবেন। রান্নায় একেবারে কম তেল ব্যবহার করুন। সেই সঙ্গে দুধ, দুধের তৈরি খাবার, ঘি-মাখন যতটা সম্ভব কম খাওয়া যায় সেই চেষ্টা করুন।
ডিমের কুসুম, রেড মিট, ময়দা, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এসব একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত । এমনকী প্রক্রিয়াজাত খাবার, কেক, কুকিজ, পেস্ট্রি, পনির, ঘি, মাখন, চিজ এসব বাদ দিতে পারলেই ভাল। এতে শরীর থাকবে সুস্থ। 
দিনের শুরু করুন চা-বিস্কুট দিয়ে। 

●দৈনিক খাদ্য তালিকা :
ব্রেকফাস্টে সবথেকে ভাল হল ওটস। মিড মর্নিং-এ খান একবাটি ফল আর ডাবের জল। লাঞ্চে ব্রাউন রাইস, ডাল, সবজি, একবাটি টকদই, রাতে দুটো রুটি, স্যালাড, সবজি তরকারি আর ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ এই ভাবে খেতে পারেন। এছাড়াও ডিমের সাদা অংশ, চিকেন স্যালাড, মুগ ডাল, পোহা. ইডলি-সাম্বার, ফ্রুট স্যালাডও কিন্তু কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
        এক্ষেত্রে সবথেকে ভাল যদি কোনও বিশেষজ্ঞের থেকে ডায়েট চার্ট বানিয়ে নেন। কারণ প্রতিটি মানুষের ডায়েট চার্ট কিন্তু আলাদা হয়।

Comments