Alzheimer রোগ সম্পর্কে কিছু কথা
Alzheimer এক ধরনের বার্ধক্যজনিত স্নায়বিক রোগ । এই রোগের কোনও প্রতিকার নেই। এই রোগে সাধারণত স্মৃতিভ্রংশ হয়।৬৫ বছরের পরে এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি।
■ আলজাইমার রোগের কারণ:
1.মাথায় আঘাতের কারণে আল্জ্হেইমার হতে পারে, বার্ধক্যের সাথে ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, এবং যদি একাধিক মাথায় আঘাতের আঘাতও থাকে। মাথায় আঘাতের পর প্রথম 6 মাস থেকে 2 বছরের মধ্যে ঝুঁকি সর্বোচ্চ বলে মনে করা হয়।
2.অনিদ্রা আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
3. এই রোগ একই জেনেটিক বা পারিবারিক ইতিহাসের কারণে ঘটতে পারে।
4. ডাউন সিনড্রোম (একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার) রোগীদের আল্জ্হেইমার রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
5. অন্যান্য কারণগুলি যেমন- ব্যায়ামের অভাব, স্থূলতা, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, টাইপ 2 ডায়াবেটিস ইত্যাদি আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
■ আলজাইমার রোগের লক্ষণ:
৹প্রাথমিক লক্ষণ-
1.তারিখ এবং সময় ট্র্যাক হারানো।
2.সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা।
3.প্রতিদিনের কাজ সময়মতো শেষ করতে না পারা।
4.সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা।
5.কথা বলতে সমস্যা।
৹মাঝারি লক্ষণ –
1.কোনো বিশেষ কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া।
2.বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের চিনতে সমস্যা হওয়া।
3.পড়তে ও লিখতে অসুবিধা।
4.নতুন কাজ শিখতে ও বুঝতে অক্ষমতা।
৹গুরুতর লক্ষণ-
1.ওজন হ্রাস।
2.খিঁচুনি অনুভব করুন।
3.ত্বকের সংক্রমণ।
4.খাবার গিলতে অসুবিধা।
5.প্রস্রাব কমে যাওয়া
■আলজাইমার রোগের সমস্যা :
একই প্রশ্ন বার বার করতে থাকা
কোন দীর্ঘ আলোচনা করার পরে সেই বিষয়টি পুনরায় ভুলে যাওয়া।স্নান করা বা জামা পড়ার মতো সামান্য কাজ ভুলে যাওয়া।পরিচিত জায়গা বা পরিচিত মানুষদের চিনতে না পারা।খাবার খেয়েছে কিনা সে বিষয়ে দ্বিধায় থাকা বা খাবারের নাম মনে করতে না পারা। রোজকার জিনিস অন্য জায়গায় ভুলে রেখে দেওয়া।
চূড়ান্ত পর্যায়ে রোগীরা নিজে নিজের যত্ন নিতে পারেন না, নিজের মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী—কাউকেই চিনতে পারেন না।স্নান করা, টয়লেট করা, কাপড় পরা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি কারও সাহায্য ছাড়া করতে পারেন না।এ সময় রোগীর সংক্রমণ, জ্বর, ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্ত শূন্যতা, পুষ্টিহীনতা, ডিহাইড্রেশন ইত্যাদিও দেখা দিতে পারে।
■ ডায়েট:
*পূর্ণ শস্যযুক্ত খাবার-দিনে খাবারের তালিকায় পূর্ণ শস্যযুক্ত খাবার রাখুন। লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, গম, ওটস, হোল গ্রেইন পাস্তা, পপকর্ন—এগুলো পূর্ণ শস্যযুক্ত খাবার।
*সামুদ্রিক মাছ- ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ যেমন স্যামন, টুনা, ম্যাকরেল ইত্যাদি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
*শিম ও শিমের বিচি-স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে এটা খুবই উপকারী। এতে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে।
*শাকসবজি- সবুজ শাক, বিশেষ করে পালংশাক, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শালগম এবং আরও যে সবুজ রঙের শাকসবজি রয়েছে, সেগুলো খেতে হবে। এতে লুটেইন, ফলেট, ভিটামিন ই, বিটা ক্যারোটিন এবং পলিফেনলস রয়েছে।
*বাদাম: স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বাদামের জুড়ি নেই। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন অল্প বাদাম খান।
*অলিভ অয়েল: রান্নার কাজে এবং স্যালাড তৈরিতে ড্রেসিং হিসেবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
★মাইন্ড ডায়েট★
এই রোগ ঠেকাতে 'মাইন্ড ডায়েট' অনবদ্য। প্রবক্তা মার্থা ক্লেয়ার মরিস ৯২৩ জন বয়স্ক মানুষকে প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে গবেষণা চালিয়ে পেয়েছেন এই তথ্য। যত বেশি দিন ধরে এই ডায়েট খাওয়া হয়েছে, উপকারের পাল্লা বেড়েছে তত। জার্নাল অব অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড ডিমেনশিয়া, দ্য জার্নাল অব দ্য অ্যালঝাইমার্স অ্যাসোয়িয়েশন-এ প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য।বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত মাইন্ড ডায়েট খান, তাঁদের মধ্যে অ্যালঝাইমার্স ডিজিজের আশঙ্কা প্রায় ৫৩ শতাংশ কমে। আর যাঁরা মাঝেমধ্যে খান, তাঁদের কমে প্রায় ৩৫ শতাংশ।
এক্ষেত্রে 10 ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়। সব্জি, সবুজ শাক, বেরি, বিশেষ করে ব্লুবেরি, বাদাম, বিনসের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ ওয়াইন খেতে বলা হয়| ছাড়াও ব্রাউন রাইস, আটা, জোয়ার, বাজরা, রাগি, ওটসের মতো হোল গ্রেন খাওয়া জরুরি। আর খেতে হবে মাছ, চিকেন, ডিম। রান্নায় ব্যবহার করতে হবে অলিভ অয়েল। বাদ দিতে হয় ৫টি অস্বাস্থ্যকর খাবার। যেমন, ভাজাভুজি ও ফাস্ট ফুড, রেড মিট, চিজ, মাখন ও মার্জারিন।সকালে উঠে ভেজানো বাদাম খেতে পারলে খুব ভালো, নইলে আমন্ড চলতে পারে।
বেশির ভাগ ডায়েট যেখানে ওজন কমানো বা মেদ ঝরানোর কথা বলে থাকে, মাইন্ড ডায়েট বলে মস্তিষ্ক সুস্থ রাখার কথা। ‘কারণ আলঝেইমার ডিজিজ ঠেকাতে 'মাইন্ড ডায়েট' অনবদ্য’ এমন তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়।
Comments
Post a Comment