ব্যালেন্স ডায়েট বা সুষম খাদ্যের গুরুত্ব
■ব্যালেন্স ডায়েট বা সুষম খাদ্যের গুরুত্ব■
ব্যালেন্স ডায়েট বলতে বোঝায়, যে খাবার গ্রহণ করলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদানের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ হবে। কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল সব থাকবে ব্যালেন্সড ডায়েটে।
★ব্যালান্স ডায়েট বা সুষম খাদ্যের গুরুত্ব :
১। ব্যালান্স ডায়েট শারীরিক গঠনে সহায়তা করে।
২। কর্ম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
৩। শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়াতা করে।
★সুষম খাদ্যের প্রকারঃ
একটি সুষম খাদ্য প্রধানত দুই প্রকার।
যথা- A. মুখ্য খাদ্যঃ
১। প্রোটিন জাতীয় খাদ্য ~
উৎস- দুধ, সয়াবিন, শস্য, ডিম, মাংস, মাছ ইত্যাদি।
২। কার্বোহাইড্রেট খাদ্য ~
উৎসঃ গম, ভুট্টা, সবজি, ফল ইত্যাদি।
৩। ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাদ্য~
উৎসঃ অলিভ অয়েল, সয়াবিন অয়েল, সরিষার তেল ইত্যাদি।
B.গৌণ খাদ্যঃ
১। ফাইবার বা তন্তু জাতীয় খাদ্য~
উৎসঃ বীট, গাঁজর, ভুট্টা ইত্যাদি।
২। ভিটামিন~
উৎসঃ ফল, সবজি, ইত্যাদি।
৩। মিনারেল বা খনিজ লবণ~
উৎসঃ জল, খাদ্য লবন ইত্যাদি।
★ব্যালান্সড ডায়েটে কি কি থাকবে-
1.ফাইবার: খাদ্যতালিকায় যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার থাকতে হবে। বিশেষ করে সবুজ শাকসবজি, স্যালাড যেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকে। ডাল, লাল চাল, ভুষিসুদ্ধ আটার রুটি/পাউরুটি তে প্রচুর ফাইবার থাকে।
2.ফ্যাট: বাইরে থেকে কেনা সব ডিপ ফ্রায়েড খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। বদলে খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে ঘি, সরষের তেল, তিলের তেল, পেস্তা , কাজু, আমন্ডের মতো বাদাম।
3.প্রোটিন: দুধ, দই, ছানা, ডিম, চিকেন, ছোলা-মুগ, ছাতু, মাছ ইত্যাদি সব কিছুতেই প্রোটিন আছে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন থাকবে যথাযথ।
4.কর্বোহাইড্রেট: সাদা ভাতের চেয়ে যেহেতু লাল চালের ভাত, ওটস বা জোয়ার-বাজরা জটিল কার্বোহাইড্রেট তাই এগুলিকে প্রসেস করতে শরীরের অনেক বেশি সময় লাগে। রাতের দিকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণটা কমাতে হবে।
5.ভিটামিন ও মিনারেল: তাজা ফল, সিডস, বাদাম, শাকসবজি থেকে পাওয়া যায় প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল।
6.জল : আমাদের শরীর প্রায় 65% জল দ্বারা গঠিত, এটি শোষণ, হজম, মলত্যাগে সহায়তা করে এবং আমাদের শরীরের চারপাশে পুষ্টির সঞ্চালনে সহায়তা করে। আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তাপ বিতরণের জন্যও জল অপরিহার্য। এছাড়াও জল আমাদের শরীরের চলন্ত জয়েন্ট এবং আমাদের চোখ লুব্রিকেট করে।
★সুষম খাদ্যের উপকারিতা -
A.একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য মানবদেহকে নির্দিষ্ট ধরণের রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে,
B.উন্নত স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য।
C.স্বাস্থ্যকর খাবার পর্যাপ্ত শরীরের ওজনেও অবদান রাখতে পারে।
D.ভাল মেজাজ বজায় রাখে।
প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সহজেই রোগে আক্রান্ত হয়। ফলে এক সময় গিয়ে মানুষ গুরুতর আক্রান্তে ভুগে।সুষম খাদ্যের অভাবে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হয়। ফলে একটা সময় গিয়ে শিশুর মৃত্যু ও হতে পারে।শিশুর জন্মের ৬ মাস মায়ের দুধে যথেষ্ট। কিন্তু ৬ মাস পরে শিশুকে যথাযথ পরিমান সুষম খাবার দিতে হবে, তা না হলে শিশুর মেধা বিকাশ ত্বরান্বিত হবে।
সুতরাং আমরা এটাই বলতে পারি যে, সুষম খাদ্য মানব দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রয়োজন মাফিক সবাই চেষ্ঠা করব সুষম খাদ্য গ্রহন করার।
Comments
Post a Comment