সুস্থ থাকতে যোগ ব্যায়ামের গুরুত্ব

যোগ ব্যায়ামের শুরু সেই 5000 বছর আগে। 5 হাজার বছর আগেই মানুষ  নিজের শরীরকে শক্তিশালী করে তুলতে, আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করতে, মনকে শান্ত রাখতে নিয়মিত যোগ ব্যায়ামের অনুশীলন করতেন।নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষেরই সুস্থ থাকার জন্য কিছু না কিছু যোগ ব্যায়াম করা দরকার ।

আসন আর ব্যায়ামে কিছুটা পার্থক্য আছে। যেমন ব্যায়াম হচ্ছে খেলাধুলা, সাঁতারকাটা, হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং, জিম, এ্যাক্রোবিক ইত্যাদি। খালি হাতে ব্যায়াম করা যায় আবার যন্ত্রপাতির সাহায্যে ও  ব্যায়াম করা হয়।যোগাসন ছাড়া এমন কোন ব্যায়াম নেই যাতে শরীরের অস্থি সন্ধিতে এবং ফুসফুস, প্লীহা, পাকস্থলী, মূত্রথলী, যকৃৎ, বৃক্ক ইত্যাদি অঙ্গে  ভালভাবে রক্ত সঞ্চালন হতে পারে। যোগাসন ছাড়া এমন কোন ব্যায়াম নেই যাতে মেরুদণ্ডে আড়াআড়ি আর লম্বালম্বী চাপ পড়তে পারে এবং মেরুদণ্ড দুইদিকে স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে। যোগাসন শরীরের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন গ্রন্থিগুলোকে সতেজ ও সক্রিয় করে তোলে। তাই যোগাসনকেই সর্বোত্তম বলে ধরা হয়।
আসন প্রধানত দুই প্রকারের-স্বাস্থ্যাসন আর ধ্যানাসন। স্বাস্থ্যাসনের অভ্যাস করা হয় মূলত দেহের স্বাস্থ্যের জন্য আর কিছু করা হয় আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য। ধ্যানাসনের মুল উদ্দেশ্য হলো মনের একাগ্রতা বাড়ানো। 

প্রতিদিন যোগাসনের অনেক উপকারিতা আছে। 
1)মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম:- যোগ অভ্যাস মূলত মনের শান্তি বাড়িয়ে তুলে মনকে চাপ মুক্ত করতে সাহায্য করে।মনকে চাপমুক্ত করার সাথে সাথে এটি মনকে শান্ত করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি বা কষ্ট এই ধরনের সমস্যার থেকে  মুক্তি দেয়। 
‌2)শরীরকে নমনীয়তা প্রদান:-  আরেকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল শরীরের ভারসাম্য এবং নমনীয়তা বৃদ্ধি, যা বেশি বয়সের জন্য অপরিহার্য। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন পেশীর নমনীয়তা হ্রাস পায়। সেইক্ষেত্রে যোগ ব্যায়ামই একমাত্র ভরসা।
3) হৃদযন্ত্রের সতেজতা রক্ষায় যোগব্যায়াম:- নিয়মিত যোগব্যায়াম ব্যবহার করে রক্তচাপের মান নিয়ন্ত্রণের মধ্যে (120-80 mmHg) রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তের কলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও কম করে হৃদস্পন্দনের হার ঠিক রাখতে সাহায্য করে।যে সমস্ত ব‍্যাক্তির হৃদরোগের ইতিহাস আছে, বা যাদের কখনো স্ট্রোক হয়েছে তাদের জন্য যোগা অনুশীলন অত্যন্ত কার্যকরী।
4) অনিদ্রা দূর করতে যোগ ব্যায়াম:- শহুরে এলাকায় বাসকারী মানুষের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির মধ্যে একটি অপর্যাপ্ত ঘুম।পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায় যখন কোনো ব্যক্তির স্থূলতা,বিষণ্নতা, এবং উচ্চ রক্তচাপের মত বিভিন্ন সমস্যা এর সাথে যুক্ত হয়। যোগব্যায়াম এমত পরিস্থিতির হাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এটি ঘুমের সমস্যার দূর করে, ঘুমকে গভীর ও দীর্ঘ করে। ঘুমের জন্য ঔষধের নির্ভরতা হ্রাস করতেও যোগব্যায়াম অপরিহার্য। 

উদ্বেগ বিহীন স্বাস্থ্যকর জীবন পাওয়ার জন্য গবেষকরা প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সময় বা সূর্যাস্তের সময় আধঘণ্টা করে যোগ ব্যায়াম করার পরামর্শ দিচ্ছেন।আপনি ও আপনার স্বাস্থ্যের কথা ভেবে নিয়মিত যোগব্যায়াম এর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

Comments